***নিষ্কাশন নালা পরিষ্কার রাখুন যেন ধানের জমিতে পানি জমে না থাকতে পারে। *** জমির আইল উঁচু করে দিন। ***ফসলের জমি থেকে অতিরিক্ত পানি সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা রাখুন। ***সেচ, সার ও বালাইনাশক প্রদান থেকে বিরত থাকুন। ***বৃষ্টিপাতের পর বালাইনাশক প্রয়োগ করুন। কলা ও অন্যান্য উদ্যানতাত্বিক ফসল এবং সবজির জন্য খুঁটির ব্যবস্থা করুন।***

কৃষি সমাচার

কৃষি / মৎস্য / পশুসম্পদ এবং বাজার দর বিষয়ক অনুষ্ঠান

প্রতিদিন     সকাল ৭-৫০ মিনিট

সোনালি ফসল

আসর ভিত্তিক আঞ্চলিক অনুষ্ঠান

প্রতিদিন     সন্ধ্যা ৬-০৫ মিনিট

দেশ আমার মাটি আমার

কৃষি ভিত্তিক জাতীয় অনুষ্ঠান

প্রতিদিন     সন্ধ্যা ৭-০৫ মিনিট

সবুজ প্রান্তর

ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান

প্রতি শুক্রবার     বিকাল ৫-৫০ মিনিট (ঢাকা-ক)

শস্য-শ্যামল

ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান

মাসের ২য় শুক্রবার     রাত ৮-৩০ মিনিট (ঢাকা-খ)

সাইটটি শেষ হাল-নাগাদ করা হয়েছে: 13/12/2024

এ সময়ের কৃষি
এ সময়ের কৃষি

বর্ষায় রোপণ করা চারা কোনো কারণে নষ্ট হলে সেখানে নতুন চারা রোপণ করতে হবে। বড় হয়ে যাওয়া চারার সঙ্গে বাঁধা খুঁটি সরিয়ে দিতে হবে এবং চারার চারদিকের বেড়া প্রয়োজনে সরিয়ে বড় করে দিতে হবে। মরা বা রোগাক্রান্ত ডালপালা ছেঁটে দিতে হবে। চারা গাছসহ অন্যান্য গাছে সার প্রয়োগের উপযুক্ত সময় এখনই। গাছের গোড়ার মাটি ভালো করে কুপিয়ে সার প্রয়োগ করতে হবে। দুপুর বেলা গাছের ছায়া যতটুকু স্থানে পড়ে ঠিক ততটুকু স্থান কোপাতে হবে। পরে কোপানো স্থানে জৈব ও রাসায়নিক সার ভালো করে মিশিয়ে দিতে হবে।

এ সময়ের কৃষি

এই সময় অন্যান্য সময়ের থেকে আশ্বিন মাসে কলার চারা রোপণ করা সবচেয়ে বেশি লাভজনক। এতে ১০-১১ মাসে কলার ছড়া কাটা যায়। কলা বাগানে সাথী ফসল হিসেবে ধান, গম, ভুট্টা ছাড়া যে কোনো রবি ফসল চাষ করা ভালো। বর্ষায় রোপণ করা চারা কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেলে সেখানে নতুন চারা রোপণ করতে হবে।

এ সময়ে লাউ ও শিমের বীজ বপনে করনীয়

ভাদ্র মাসে লাউ ও শিমের বীজ বপন করা যায়। এজন্য ৪-৫ মিটার দূরে দূরে ৭৫ সেমি. চওড়া এবং ৬০ সেমি. গভীর করে মাদা বা গর্ত তৈরি করতে হবে। এরপর প্রতি মাদায় ২০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম টিএসপি এবং ৭৫ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। মাদা তৈরি হলে প্রতি মাদায় ৪-৫টি বীজ বুনে দিতে হবে এবং চারা গজানোর ২-৩ সপ্তাহ পর দুই-তিন কিস্তিতে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৭৫ গ্রাম এমওপি সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। এ সময় আগাম শীতকালীন সবজি চারা উৎপাদনের কাজ শুরু করা যেতে পারে।

এ সময়ে আখ চাষীদের জন্য করণীয়

এ সময় আখ ফসলে লালপচা রোগ দেখা দিতে পারে। লালপচা রোগের আক্রমণ হলে আখের কাণ্ড পচে যায় এবং হলদে হয়ে শুকিয়ে যেতে থাকে। এজন্য আক্রান্ত আখ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং জমিতে যাতে পানি না জমে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া রোগমুক্ত বীজ বা শোধন করা বীজ ব্যবহার করলে অথবা রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করলে লালপচা রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। লালপচা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন কয়েকটি আখের জাত হচ্ছে ঈশ্বরদী ১৬, ২০, ২১ ।

এ সময়ের কৃষি

অর্ধেকের বেশি পাট গাছে ফুল এলে পাট কাটতে হবে। এতে আঁশের মান ভালো হয় এবং ফলনও ভালো পাওয়া যায়। পাট পচানোর জন্য আঁটি বেঁধে পাতা ঝরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং জাগ দিতে হবে। ইতিমধ্যে পাট পড়ে গেলে আঁশ ছাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাটের আঁশ ছাড়িয়ে ভালো করে ধোয়ার পর ৪০ লিটার পানিতে এক কেজি তেঁতুল গুলে তাতে আঁশ ৫-১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে, এতে উজ্জ্বল বর্ণের পাট পাওয়া যায়।

ভুট্টা সংগ্রহ

এ সময় পরিপক্ব হওয়ার পর বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার আগে মোচা সংগ্রহ করে ঘরের বারান্দায় সংগ্রহ করতে পারেন। এক্ষেত্রে মোচা থেকে দানা সংগ্রহ করতে প্রয়োজনে ভুট্টা মাড়াই যন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। রোদ হলে শুকিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মোচা পাকতে দেরি হলে মোচার আগা চাপ দিয়ে নিম্নমুখী করে দিতে হবে, এতে বৃষ্টিতে মোচা নষ্ট হবে না।

গাছের চারা রোপন

এ সময়টা বৃষ্টি হয় প্রচুর পরিমাণে তাই এখন গাছের চারা রোপণের জন্য খুবই উপযুক্ত। বসতবাড়ির আশপাশে, খোলা জায়গায়, চাষাবাদের অনুপযোগী পতিত জমিতে, রাস্তাঘাটের পাশে, পুকুর পাড়ে, নদীর তীরে গাছের চারা বা কলম রোপণের উদ্যোগ নিতে হবে; এ সময় বনজ গাছের চারা ছাড়াও ফল (কাঁঠাল, আম ইত্যাদি) ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করতে পারেন; ফলের চারা রোপণের আগে গর্ত তৈরি করতে হবে; সাধারণ হিসাব অনুযায়ী এক ফুট চওড়া ও এক ফুট গভীর গর্ত করে গর্তের মাটির সাথে ১০০ গ্রাম করে টিএসপি ও এমওপি সার মিশিয়ে, দিন দশ পরে চারা বা কলম লাগাতে হবে; বৃক্ষ রোপণের ক্ষেত্রে উন্নত জাতের রোগমুক্ত সুস্থ-সবল চারা বা কলম রোপণ করতে হবে; চারা শুধু রোপণ করলেই হবে না। এগুলোকে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। চারা রোপণের পর শক্ত খুঁটি দিয়ে চারা বেঁধে দিতে হবে। এরপর বেড়া বা খাঁচা দিয়ে চারা রক্ষা করা, গোড়ায় মাটি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার, সেচনিকাশ নিশ্চিত করতে হবে; নার্সারি মালিক যারা তাদের মাতৃগাছ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি খুব জরুরি। সার প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার, দুর্বল রোগাক্রান্ত ডালপালা কাটা বা ছেঁটে দেয়ার কাজ সুষ্ঠভাবে করতে হবে।

এ সময়ের কৃষি

আমন ধানের বীজতলা তৈরির সময় এখন। পানিতে ডুবে না এমন উঁচু খোলা জমিতে বীজতলা তৈরি করতে হবে। পানির কারণে রোপা আমনের বীজতলা করার মতো জায়গা না থাকলে ভাসমান বীজতলা বা দাপগ পদ্ধতিতে বীজতলা করে চারা উৎপাদন করা যায়। বীজতলায় বীজবপন করার আগে ভালো জাতের মানসম্পন্ন বীজ নির্বাচন করতে হবে।

এ সময়ের কৃষি

এ সময় আগাম জাতের শিম এবং লাউয়ের জন্য প্রায় ৩ ফুট দূরে দূরে ১ ফুট চওড়া ও ১ ফুট গভীর করে মাদা তৈরি করতে হবে। মাদা তৈরির সময় গর্ত প্রতি ১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম সরিষার খৈল, ২ কেজি ছাই, ১০০ গ্রাম টিএসপি ভালোভাবে মাদার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর প্রতি মাদায় ৩ থেকে ৪টি ভালো সবল বীজ রোপণ করতে হবে। সবসময় আপনার এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ রাখবেন।

এ সময়ের কৃষি

এ মাসেই আগামী মাসের জন্য চারা লাগানোর জন্য জায়গা নির্বাচন, গর্ত তৈরি ও গর্ত প্রস্তুতি, সারের প্রাথমিক প্রয়োগ, চারা নির্বাচন এ কাজগুলো শেষ করে ফেলতে হবে।উপযুক্ত মাতৃগাছ থেকে ভালোবীজ সংগ্রহ করে নারকেল, সুপারির বীজ বীজতলায় এখন লাগাতে পারেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নিলে আরও বেশি লাভবান হবেন।

এ সময় পাট চাষীদের করণীয়

পাটের জমিতে আগাছা পরিষ্কার, ঘন ও দুর্বল চারা তুলে পাতলা করা, সেচ এসব কাজগুলো যথাযথভাবে করুন। ফাল্গুনি তোষা জাতের জন্য একর প্রতি ৪০ কেজি ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করুন। মাটিতে রস না থাকলে বা দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হলে হালকা সেচ দিন এবং বৃষ্টির কারণে পানি জমে থাকলে তা বের করার ব্যবস্থা নিন। এ মাসে পাটের বিছা পোকা এবং ঘোড়া পোকা জমিতে আক্রমণ করে থাকে। এদের আক্রমণ রোধ করতে পোকার ডিমের গাদা, পাতার নিচ থেকে পোকা সংগ্রহ করে মেরে বা পুরিয়ে ফেলুন। আক্রমণ বেশি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিকভাবে, সঠিক সময়ে, সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করুন।

এ সময়ে ধান চাষীদের করণীয়

এ সময় ধান চাষীদের বেশ সতর্ক থাকতে হবে।জমির ধান শতকরা ৮০ শতাংশ পেকে গেলে রিপার বা কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে ধান সংগ্রহ করুন। হারভেস্টার দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪ বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই করা যায়। হাত বা রিপার দিয়ে সংগৃহীত ধান পাওয়ার থ্রেসার দিয়ে মাড়াই করুন। এতে সময় ও খরচ বাঁচবে।

এ সময়ের কৃষি

যেহেতু এখন খরা মৌসুম চলতেছে, তাই আম গাছ সহ ফল গাছ গুলোতে পানি পর্যাপ্ত পরিমানে দিতে হবে। যেন ফল ঝড়া রোধ হয়। গবাদিপশুদের পর্যাপ্ত পানি পান করাতে হবে। মাছের পুকুরে কচুরিপানা দিয়ে ছায়া করতে হবে। কিংবা নারিকেল এর ডাল দিয়ে ছায়া করতে হবে মাচা করে।

পাটের বীজ বপন

যেসকল জমি থেকে পিঁয়াজ উত্তোলন হয়ে গেছে, সেখানের মাটিতে জো আসলে পাট এর বীজ বপন করতে হবে। তবে, চৈত্র মাসের শেষ পর্যন্ত পাটের বীজ বপন করা যায়। পাটের ভালো জাতগুলো হলো ফাল্গুনী তোষা ও-৯৮৯৭, বিজেআরআই তোষা পাট-৫, বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১), বিজেআরআই দেশি পাট-৭, বিজেআরআই দেশি পাট-৮, বিজেআরআই দেশি পাট-৯, সিভিএন-১, বিজেআরআই কেনাফ-২, বিজেআরআই মেস্তা এইচএম-২৪, বিজেআরআই মেস্তা-২। পাট চাষের জন্য উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি নির্বাচন করে আড়াআড়িভাবে ৫/৬টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। সারিতে বুনলে প্রতি শতাংশে ২৫ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। তবে ছিটিয়ে বুনলে আরেকটু বেশি অর্থাৎ ৩০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। পাটের জমিতে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেন্টিমিটার (প্রায় ১ ফুট) এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৭ সেন্টিমিটার (প্রায় ৩ ইঞ্চি) রাখা ভাল। ভাল ফলনের জন্য প্রতি একরে ৭০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি টিএসপি, ১২ কেজি এমওপি, ১৮ কেজি জিপসাম এবং প্রায় ৪.৫ কেজি জিংকসালফেট সার প্রয়োগ করতে হবে। সবসময় আপনার এলাকার কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ রাখবেন।

এখনই উপযুক্ত সময় গ্রীষ্মকালীন টমেটো, ঢেঁড়স, বেগুন, করলা, ঝিঙা, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, শসা, ওলকচু, পটল, কাঁকরোল, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, লালশাক, পুঁইশাক এসব সবজি চাষ করতে পার এবং এ সময়ে আম গাছের যত্নের ক্ষেত্রে আমের মুকুল আসার সময় শোষক পোকা (হপার) এবং অ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণে ফুল ঝরে যায়। আম বাগান সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। প্রয়োজনে কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে।

এ সময় যারা পেঁয়াজ উঠিয়েছেন বা উঠাচ্ছেন। তারা একটু শুকিয়ে তারপর বাজারজাত করবেন। পেঁয়াজের উপরের অংশ অর্থাৎ খাঁটি বাংলা ভাষায় পেঁয়াজের পাতা রান্না করে তথা পচিয়ে সার হিসেবেও আপনারা ব্যাবহার করতে পারেন।

এ সময় প্রাণী সম্পদে করণীয়

আমাদের গ্রাম বাংলায় প্রত্যেক বাড়ীতে মুরগি, গরু ছাগল কম বা বেশি আছে। এ সময় মুরগির রানীক্ষেত, মাইকোপ্লাজমোসিস, ফাউল টাইফয়েড, পেটে পানি জমা এসব রোগ দেখা দিতে পারে। সে কারণে প্রয়োজনীয় টিকা প্রদান করতে হবে; খাবারের সাথে ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই সরবরাহ করতে হবে। গবাদিপশুকে প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিন দিতে হবে এবং কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে। গবাদিপশুকে উন্নত খাবার সবুজ ঘাস, ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র, ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক এসব খাওয়াতে হবে। আপনার এলাকার প্রাণি চিকিৎসক এর সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখবেন।

পাটের বীজ বপনে করনীয়

ফাল্গুনের মাঝামাঝি থেকে চৈত্রের শেষ পর্যন্ত পাটের বীজ বপনের উপযুক্ত সময়; পাটের ভালো জাত-ও-৯৮৯৭, ওএম-১, সিসি-৪৫, বিজেসি-৭৩৭০, সিভিএল-১, এইচসি-৯৫, এইচ এস-২৪; স্থানীয় বীজ ডিলারদের সাথে যোগাযোগ করে জাতগুলো সংগ্রহ করতে পারেন, চাষের জন্য উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি নির্বাচন করে আড়াআড়িভাবে ৫/৬টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। সারিতে বুনলে প্রতি শতাংশে ১৭ থেকে ২০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। তবে ছিটিয়ে বুনলে আরেকটু বেশি অর্থাৎ ২৫-৩০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। পাটের জমিতে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেন্টিমিটার এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৭-১০ সেন্টিমিটার। ভালো ফলনের জন্য একরপ্রতি ৬ কেজি ইউরিয়া, ৭ কেজি টিএসপি, ৯ কেজি এমওপি সার শেষ চাষের সময় মাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সবসময় আপনার এলাকার কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রাখবেন।

মাছ চাষে এ সময়ে করণীয়

যারা মাছ চাষ করেন তাদের মাছ চাষের জন্য পুকুর তৈরি ও সংস্কার করার উপযুক্ত সময়। পুকুরের পানি শুকিয়ে গেলে নিচ থেকে পচা কাদা তুলে ফেলতে হবে এবং শতাংশ প্রতি ১ কেজি চুন ও ১০ কেজি গোবর বা কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করতে হবে। পানিভর্তি পুকুরে প্রতি শতাংশে ৬ ফুট পানির জন্য ১ কেজি চুন গুলে ঠাণ্ডা করে দিতে হবে। এছাড়া শতাংশপ্রতি ১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম টিএসপি একসাথে মিশিয়ে পানিভর্তি পুকুরে দিতে হবে। শীতের পর এ সময় মাছের বাড়বাড়তি দ্রুত হয়। তাই পুকুরে প্রয়োজনীয় খাবার দিতে হবে এবং জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।

আমের মুকুলের যত্ন

এ সময় বেশ কিছু গাছে মুকুল আসবে আবার ফাল্গুন মাস শুরু হতে হতে সব গাছেই মুকুল চলে আসবে। আমের মুকুলে অ্যানথ্রাকনোজ রোগ এসময় দেখা দেয়। এ রোগ দমনে গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্ব পর্যন্ত আক্রান্ত গাছে টিল্ট-২৫০ইসি প্রতি লিটার নিতে ০.৫ মিলি আথবা ২ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রের করতে হবে। এছাড়া আমের আকার মটর দানার মতো হলে গাছে ২য় বার স্প্রে করতে হবে। এ সময় প্রতিটি মুকুলে অসংখ্য হপার নিম্ফ দেখা যায়। আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বেই একবার এবং এর একমাস পর আর একবার প্রতি লিটার পানির সাথে ১.০ মিলি সিমবুস/ফেনম/ডেসিস ২.৫ ইসি মিশিয়ে পুরো গাছ ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। আপনার এলাকার কৃষি কর্মকর্তার সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখবেন।

এ সময় বোরো ধান চাষে করণীয়

এখন যাদের ধানের চারার বয়স ৫০-৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিস্তি উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। সার দেয়ার আগে জমির আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হবে। ধানের কাইচ থোড় আসা থেকে শুরু করে ধানের দুধ আসা পর্যন্ত ক্ষেতে ৩/৪ ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে হবে। পোকা দমনের জন্য নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে (আলোর ফাঁদ পেতে, পোকা ধরার জাল ব্যবহার করে, ক্ষতিকর পোকার ডিমের গাদা নষ্ট করে, উপকারী পোকা সংরক্ষণ করে, ক্ষেতে ডাল-পালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করে) ধানক্ষেত বালাই মুক্ত রাখতে হবে। এ সময় ধান ক্ষেতে উফরা, ব্লাস্ট, পাতাপোড়া ও টুংরো রোগ দেখা দেয়। জমিতে উফরা রোগ দেখা দিলে কৃমিনাশক ফুরাডান ৫ জি বা কিউরেটার ৫ জি প্রয়োগ করতে হবে। ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে ইউরিয়া সারের উপরিপ্রয়োগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে এবং একরপ্রতি ১৬০ গ্রাম ট্রুপার বা জিল বা নেটিভ ১০-১৫ দিনের ব্যবধানে দুইবার প্রয়োগ করতে হবে। জমিতে পাতাপোড়া রোগ হলে অতিরিক্ত ৫ কেজি/বিঘা হারে পটাশ সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে এবং জমির পানি শুকিয়ে ৭-১০ দিন পর আবার সেচ দিতে হবে। টুংরো রোগ দমনের জন্য এর বাহক পোকা সবুজ পাতা ফড়িং দমন করতে হবে। সবসময় আপনার এলাকার কৃষি কর্মকর্তার সাথ যোগাযোগ রাখবেন।

মুরগী পালনে এ সময়ে করণীয়

শীতকালে পোল্ট্রিতে অপুষ্টি, রানীক্ষেত, মাইকোপাজমোসিস, ফাউল টাইফয়েড, পেটে পানি জমা এসব সমস্যা দেখা যায় ; মোরগ-মুরগীর অপুষ্টিজনিত সমস্যা সমাধানে প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন এ, সিডিইকে ও ফলিক এসিড সরবরাহ করতে হবে। শীতের তীব্রতা বেশি হলে পোল্ট্রি শেডে অবশ্যই মোটা চটের পর্দা লাগাতে হবে এবং বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে; পোল্ট্রি লিটারে অ্যামোনিয়া গ্যাস রোধে ১ বর্গফুট জায়গায় ১ কেজি হারে অ্যামোনিল পাউডার মিশাতে হবে; শীতকালে মোরগ-মুরগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সপ্তাহে দুই দিন খাবারের সাথে ভিটামিন ই এবং ভিটামিন সি মিশিয়ে দিতে হবে।

গম চাষে এ সময়ে করণীয়

গমের জমিতে যেখানে ঘন চারা রয়েছে তা পাতলা করে দিতে হবে। গম গাছ থেকে শীষ বের হলে বা গম গাছের বয়স ৫৫-৬০ দিন হলে জরুরিভাবে গম ক্ষেতে সেচ দিতে হবে। ভালো ফলনের জন্য দানা গঠনের সময় আরেকবার সেচ দিন। গম ক্ষেতে ইঁদুর দমনের কাজটি সবাই মিলে একসাথে করুন।

এ সময়ে কৃষক ভাইদের করণীয়

শীতকাল মানেই শাকসবজি চাষের সময়। এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, ওলকপি, শালগম, গাজর, শিম, লাউ, কুমড়া, মটরশুঁটি এসবের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। টমেটো ফসলের মারাত্মক পোকা হলো ফলছিদ্রকারী পোকা। এ পোকার আক্রমণে ফলের বৃন্তে একটি ক্ষুদ্র আংশিক বদ্ধ কালচে ছিদ্র দেখা যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত ফলের ভেতরে পোকার বিষ্ঠা ও পচন দেখা যাবে। ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে এ পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রতি বিঘা জমির জন্য ১৫টি ফাঁদ স্থাপন করতে হবে। আধাভাঙ্গা নিম বীজের নির্যাস (৫০ গ্রাম এক লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে ১২ ঘণ্টা ভেজাতে হবে এবং পরে মিশ্রণটি ভালো করে ছাকতে হবে) ১০ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করে এই পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আক্রমণ তীব্র হলে কুইনালফস গ্রুপের কীটনাশক (দেবিকইন ২৫ ইসি/কিনালাক্স ২৫ ইসি/করোলাক্স ২৫ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলিলিটার পরিমাণ মিশিয়ে স্প্রে করে এ পোকা দমন করা যায়।

কৃষক ভাইদের জন্য এ সময়ে করণীয়

বর্তমানে সারা বাংলাদেশে বোরো ধানের বীজতলা তৈরির মৌসুম চলছে। অনেক আশা আকাঙ্খা নিয়ে পরিশ্রম করছেন মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। কিন্তু, এই আশার মধ্যে নিরাশা করে দিচ্ছে ঘন কুয়াশা। এতে করে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই শীতে কুয়াশার হাত থেকে কীভাবে ধানের বীজতলা রক্ষা ও বীজতলার যত্ন নিবেন- সুস্থ সবল চারা পেতে বীজতলায় সব সময় পানি রাখুন। প্রতিদিন বিকালে স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখুন এবং পরের দিন সকাল ১০-১১ টার পর খুলে দিন। বোরো মৌসুমে অধিক শীত হলে বীজতলা সন্ধ্যায় পানিতে ডুবিয়ে দিয়ে সকালে পানি ছেড়ে দিন। গভীর নলকূপের পানি হলে ভালো হয়। অধিক কুয়াশা হলে সকালে রশি টেনে শিশির ফেলে দিন। বীজ বপনের ৩-৪ দিন পর থেকে নালায় সেচ দিন এবং বীজ তলার মাটি নরম রাখুন। বীজতলায় ২-৫ সেন্টিমিটার (০.৭৮ থেকে ২ ইঞ্চি) পানি রাখুন এবং মাঝে মাঝে জমে থাকা পানি বের করে পুনরায় নতুন পানি দিন। চারা গাছ হলদে হয়ে গেলে চারা গজানোর ২ সপ্তাহ পর প্রতি শতাংশে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করুন। ইউরিয়া প্রয়োগের পর চারা সবুজ না হলে বীজতলায় মাত্রা অনুযায়ী থিয়োভিট প্রয়োগ করুন। রোগ দমনের জন্য অধিক শীত ও কুয়াশায় বীজতলায় মাত্রানুযায়ী টিল্ট বা স্কোর স্প্রে করুন।

এ সময়ের কৃষি

পৌষ মাসে আপনারা বেশ কিছু সবজি চাষ করতে পারেন যেমন - ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, ওলকপি, শালগম, গাজর, শিম, লাউ, কুমড়া, মটরশুঁটি ইত্যাদি। এসবের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। টমেটো ফসলের মারাত্মক পোকা হলো ফল ছিদ্রকারী পোকা। ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে এ পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সবসময় কৃষক ভায়েরা চেষ্টা করবেন আপনার এলাকার কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ রাখতে।

প্রাণিসম্পদে এ সময়ে করণীয়

শীত পুরোদমে আসার আগে, হাঁস-মুরগির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর ভালো সময় এখন। তাছাড়া সামনে শীতকাল আসছে। কোথাও কোথাও শীত শুরুও হয়ে গেছে। শীতকালে পোলট্রিতে রোগবালাইয়ের আক্রমণ বেড়ে যায় এবং রানীক্ষেত, মাইকোপ্লাজমোসিস, ফাউল টাইফয়েড, বসন্ত রোগ, কলেরা এসব রোগ মহামারী আকারে দেখা দিতে পারে। এসব রোগ থেকে হাঁস-মুরগিকে বাঁচাতে হলে এ মাসেই টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ মাসে পশুখাদ্যের কোনো অভাব থাকে না। বিশেষ করে কাঁচা ঘাসের। তাই আমন ধানের খরসহ অন্যান্য খাদ্য যেমন- ভুট্টা, ডাল, ঘাস দিয়ে সাইলেজ তৈরি করে ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিতে পারেন। এ সময় গবাদি পশুর ক্ষুরা রোগ, তড়কা, গলাফুলা দেখা দিতে পারে। গবাদিপশুতে রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে প্রাণিচিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ সময়ে শাকসবজি চাষে করণীয়

সময় এখন হেমন্তকাল, তাই মাঠে এখন অনেক সবজি বাড়ন্ত পর্যায়ে আছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, শালগম, মুলা এসব বড় হওয়ার সাথে সাথে চারার গোড়ায় মাটি তুলে দিতে হবে। চারার বয়স ২-৩ সপ্তাহ হলে সারের উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। সবজি ক্ষেতের আগাছা, রোগ ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করতে পারেন। এতে পোকা দমনের সাথে সাথে পরিবেশও ভালো থাকবে। জমিতে প্রয়োজনে সেচ প্রদান করতে হবে। টমেটো গাছের অতিরিক্ত ডাল ভেঙে দিয়ে খুঁটির সাথে বেঁধে দিতে হবে। ঘেরের বেড়িবাঁধে টমেটো, মিষ্টিকুমড়া চাষ করতে পারেন। মিষ্টিআলু, চীনা, কাউন, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচসহ অনেক অত্যাবশ্যকীয় ফসলের প্রাথমিক বৃদ্ধি পর্যায়। এসব ফসলের কোনটি এখনো না লাগিয়ে থাকলে দেরি না করে চারা লাগাতে হবে। এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত খরা সহনশীল ছোলা, মুগ, তিসি, যব এসব বপন করা যায়।

উপকূলীয় অঞ্চলে শীতকালীন শাক-সবজি চাষ

এ সময়ে উপকূলীয় অঞ্চলে শীতকালীন শাক-সবজি আলু, মিষ্টিআলু, তরমুজের আবাদ করা যেতে পারে। ঘেরের বেড়িবাঁধে টমেটো, মিষ্টিকুমড়া চাষ করা যায়। বোরো ধানের বীজতলা তৈরি শুরু করতে হবে। অগ্রহায়ণ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত খরা সহনশীল ছোলা, মুগ, তিল, তিসি, যব ইত্যাদি বপন করতে পারবেন।

সময়ের কৃষি কাজ সময়মতো করতে হবে-২

এখন শীতকালীন শাক-সবজি চাষের উপযুক্ত সময়। ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেধাকলি, শালগম, টমেটো, বেগুন এখনি এসবের চারা রোপণ করতে পারেন। আর যারা গতমাসে চারা রোপণ করেছেন তারা এখন যত নিবেন। আগাছা পরিষ্কার করবেন। প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ করবেন। শাকের মাঝে লালশাক, পালং শাক, মূলা, মটরশুটি এখনই চাষ করা উত্তম। মিষ্টি আলু আমাদের দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। মিষ্টি আলুতে এতো বেশি খাদ্য শক্তি আছে যা আমাদের শিশুদের জন্য খুবই দরকার। ভিটামিন এ এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়। শিশু অন্ধ হয়ে যেতে পারে। এটি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যাহোক, এটি চরাঞ্চলে ভাল হয়। চর এলাকা সহ সকল কৃষক ভাইকে বলবো সুযোগ থাকলে আপনি এর চাষ করেন। এর পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়, আর আলুতো খুই পুষ্টিকর খাদ্য। আপনার পরিবারের সকল সদস খেতে পারে বিশেষ করে শিশুরা মিষ্টি আলু খেযে তাদের পুষ্টিহীনতা দুর করতে পারবে। সবশেষ কথা হলো, সময়ের কৃষি কাজ সময়মতো করতে হবে। এটি আমাদের ফসলের মাঠেই হোক বা জীবনের যে কোন ক্ষেত্রেই হোক। সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে।

সময়ের কৃষি কাজ সময়মতো করতে হবে-১

কার্তিক মাসের শেষ সপ্তাহ এখন। এ সপ্তাহে গম ফসলের চাষ, সরিষা চাষ, আলু, মিষ্টি আলু, আখসহ শীতকালিন শাক-সবজি চাষে মনোযোগ দিতে হবে কৃষক ভাইদেরকে। প্রথমে গম চাষের কথা বলি। গম বীজ বপনের প্র ̄‘তি এখনই নিতে হবে। দো-আঁশ মাটিতে গমের ফলন ভাল হয়। ভাল ফলন পেতে হলে উন্নত জাতের গম চাষ করা দরকার। জাত ̧লো হচ্ছে- বারি গম-২৫, বারি গম-২৮, বারি গম-২৯, বারি গম-৩০, বারি গম-৩১, বারি গম-৩২, বারি গম-৩৩। লবনা৩ এলাকায় বিনা গম-১ চাষ করতে পারেন। বীজ বোনার আগে সরকার অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ব্যবহার করে গমবীজ শোধন করে নিতে হয়। সেচযুক্ত জমিতে বিঘাপ্রতি ১৬ কেজি এবং সেচ ছাড়া জমিতে বিঘাপ্রতি ১৩ কেজি বীজ বপন করতে হয়। এরপর আসি আমরা আখচাষের বিষয়ে। আখ চাষি ভাইদের এখনি চারা রোপণের কাজটি করতে হবে। ভালভাবে জমি প্রস্তুত করে আখের চারা রোপণ করা উচিৎ। আখ রোপণের জন্য সারি থেকে সারির দুরত্ব ৯০ সে: মিটার থেকে ১২০ সেন্টি মিটার হতে পারে। চারা থেকে চারার দুরত্ব ৬০ সেন্টি মিটার রাখতে হবে। এভাবে চারা রোপণ করলে বিঘাপ্রতি প্রায় ২২০০ থেকে ২৫০০ চারা রোপণ করা যাবে। আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ফসল হলো সরিষা। আমাদের তেলের ঘাটতি আছে। তাই আমাদেরকে সরিষা উৎপাদনের প্রতি জোর দিতে হবে। আর সরিষা চাষের এখনি উপযু৩ সময়। সরিষার উন্নত জাত গুলো হলো- বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৫, বারি সরিষা -১৭, বিনা সরিষা-৪, বিনা সরিষা-৯, বিনা সরিষা-১০ বিনা সরিষা-১১। এ ̧লো হচ্ছে সরিষার প্রচলিত স্বল্প মেয়াদী জাত। দীর্ঘমেয়াদি জাত গুলোর মাঝে আছে- বারি সরিষা-১১, বারি সরিষা-১৬, বারি সরিষা-১৮। বীজ বপণের ক্ষেত্রে বিঘাপ্রতি বীজ লাগবে ১ থেকে ১.৫ কেজি। তবে একটা বিষয় আপনাদের বলে রাখি যেকোন ফসল চাষের আগে আপনার জমির মাটি পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। তাহলে বুঝা যাবে জমিতে সারে ঘাটতিটা কী পরিমানে আছে। সেই হিসাব করে ফসলের জমিতে সার দিতে পারলে ভাল। কারণ এতে জমিতে কোন ফসলের জন্য কী পরিমান সার লাগবে তার পরিমান নিশ্চিত হয়ে সার প্রয়োগ করা যায়।

গম

রবি মৌসুমে আমাদের দেশে গম চাষ, ব্যাপক জনপ্রিয়। কার্তিক মাসের দ্বিতীয় পক্ষ থেকে গম বীজ বপনের প্রস্তুতি নিতে হয়। দো-আঁশ মাটিতে গম ভালো হয়। অধিক ফলনের জন্য গমের আধুনিক জাত যেমন- আনন্দ, বরকত, কাঞ্চন, সৌরভ, গৌরব, শতাব্দী, সুফী, বিজয়, বারি গম-২৭, বারি গম-২৮ রোপণ করতে হবে। বীজ বপনের আগে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নিতে হবে। সেচযুক্ত চাষের জন্য বিঘাপ্রতি ১৬ কেজি এবং সেচবিহীন চাষের জন্য বিঘাপ্রতি ১৩ কেজি বীজ বপন করতে হবে। ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার জমি তৈরির শেষ চাষের সময় এবং ইউরিয়া তিন কিস্তিতে উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। বীজ বপনের ১৩-২১ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ প্রয়োজন এবং এরপর প্রতি ৩০-৩৫ দিন পর ২ বার সেচ দিলে খুব ভালো ফলন পাওয়া যায়।

মাছ চাষ ও কৃষিতে এ সময় করণীয়

এ সময় পুকুরে আগাছা পরিষ্কার, সম্পূরক খাবার ও সার প্রয়োগ করতে হবে। তাছাড়া জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাও জরুরি। রোগ প্রতিরোধের জন্য একরপ্রতি ৪৫-৬০ কেজি চুন প্রয়োগ করতে পারেন। অংশীদারিত্বের জন্য যেখানে যৌথ মাছ চাষ সম্ভব নয় সেখানে খুব সহজে খাঁচায় বা প্যানে মাছ চাষ করতে পারেন। এছাড়া মাছ সংক্রান্ত যে কোনো পরামর্শের জন্য উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। সুপ্রিয় কৃষিজীবী ভাইবোন, শীতকাল আমাদের কৃষির জন্য একটি নিশ্চিত মৌসুম। যতবেশি যৌক্তিক বিনিয়োগ করতে পারবেন লাভও পাবেন তত বেশি। শুকনো মৌসুম বলে মাটিতে রস কম থাকে। তাই যদি প্রতি ফসলে চাহিদামাফিক সেচ প্রদান নিশ্চিত করতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার জমির ফলন কতখানি বাড়ে। একমাত্র কৃষির মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশকে সমৃদ্ধ করতে পারি। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আধুনিক কৃষির সব ক’টি কৌশল যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে আমরা আমাদের কাক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছতে পারবো। এছাড়া কৃষির যে কোনো সমস্যায় আপনার কাছের উপজেলা কৃষি অফিস, উপজেলা মৎস্য অফিস ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পরামর্শ নিতে পারেন। আপনাদের সবার জন্য শুভ কামনা। কৃষির সমৃদ্ধিতে আমরা সবাই গর্বিত অংশীদার। এ সময় পুকুরের আশেপাশে যদি ডালপালা বেশি থাকে তবে তা কেটে ফেলতে হবে। যাতে পর্যাপ্ত আলো পুকুরে প্রবেশ করতে পারে।

চাষী ভাইদের এ সময় ধানের পাতা ব্লাস্ট রোগ থেকে সতর্ক থাকতে করণীয়

এ রোগের ফলে ধান গাছের পাতা পুড়ে যাওয়ার মত দেখা যায়। অনেকে দেখে মনে করতে পারেন কারেন্ট পোকার আক্রমন কিন্তু সারাদিন খুজলেও কোন পোকা পাওয়া যাবে না। সময়ের সাথে সাথে এটি ছড়িয়ে পরে।এর ফলে ফসলে চিটার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। ব্লাস্ট রোগের কারন: ১. রাসায়নিক সারের উপরি প্রয়োগ ( ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ)। ২. ক্ষেতে পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণ না করা। ৩. অতিরিক্ত খরা বা অতিবৃষ্টির কারনেও এরোগ দেখা যেতে পারে। ব্লাস্ট রোগ দমন: ১. অতিরিক্ত ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যাবে না। ২। বিঘা প্রতি ৫ কেজি এমওপি সার বেশি প্রয়োগ করা যেতে পারে। অথবা প্রতি লিটারে ৫ গ্রাম এমওপি সার মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে। ৩. ক্ষেতে পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণ করতে হবে। #ধানের #ব্লাস্ট_রোগ #ব্লাস্ট এরোগের ফলে ফলন অনেকাংশে কমে যেতে পারে তাই আগে থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং এরোগ দেখা দিলে উপজেলা কৃষি অফিসারদের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে।

এ সময়ে ধান (আমন) এর পরিচর্যা

এ সময় আমন ধান ক্ষেতের অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা করতে হবে। ক্ষেতে আগাছা জন্মালে তা পরিষ্কার করে তারপর ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। আমন ধানের জন্য প্রতি একর জমিতে ৮০ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োজন হয়। এ সার তিনভাগ করে প্রথম ভাগ চারা লাগানোর ১৫-২০ দিন পর, দ্বিতীয় ভাগ ৩০-৪০ দিন পর এবং তৃতীয় ভাগ ৫০-৬০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। নিচু জমি থেকে পানি নেমে গেলে এসব জমিতে এখনো আমন ধান রোপণ করা যাবে। দেরিতে রোপণের জন্য বিআর ২২, বিআর ২৩, ব্রি ধান৪৬, বিনাশাইল, নাইজারশাইল বা স্থানীয় উন্নত ধান বেশ উপযোগী। দেরিতে চারা রোপণের ক্ষেত্রে প্রতি গুছিতে ৫-৭টি চারা দিয়ে ঘন করে রোপণ করতে হবে। আমন মৌসুমে মাজরা, পামরি, চুঙ্গী, গলমাছি পোকার আক্রমণ হতে পারে। এছাড়া খোলপড়া, পাতায় দাগ পরা রোগ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে নিয়মিত জমি পরিদর্শন করে, জমিতে খুঁটি দিয়ে, আলোর ফাঁদ পেতে, হাতজাল দিয়ে পোকা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাছাড়া সঠিক বালাইনাশক সঠিক মাত্রায়, সঠিক নিয়মে, সঠিক সময় শেষ কৌশল হিসাবে ব্যবহার করতে হবে। তাই আপনার এলাকার স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখবেন। কৃষিবিদ শেখ মোঃ সাব্বির সজিব

শাকসবজি

বর্তমান সমআমাদের দেশ সবজি উৎপাদনে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। আর শীতকাল মানেই হচ্ছে সবজির ব্যাপক সহজলভ্যতা। তাছাড়া আগাম শীতের সবজি উৎপাদনের জন্য উঁচু জয়গা কুপিয়ে পরিমাণ মতো জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে শাক উৎপাদন করা যায় যেমন মুলা, লালশাক, পালংশাক, চিনা শাক, সরিষা শাক অনায়াসে করা যায়। সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, শালগম, টমেটো, বেগুন, ব্রোকলি বা সবুজ ফুলকপিসহ ইত্যাদি। শীতকালীন সবজির চারা তৈরি করে মূল জমিতে বিশেষ যত্নে আবাদ করা হয় এগুলো।

কলা/ চারা রোপণ

অন্যান্য সময়ের থেকে এ মাসে কলার চারা রোপণ করা সবচেয়ে বেশি লাভজনক। এতে ১০-১১ মাসে কলার ছড়া কাটা যায়। ভালো উৎস বা বিশ্বস্ত চাষি ভাইয়ের কাছ থেকে কলার অসি চারা সংগ্রহ করে রোপণ করতে হবে। কলার চারা রোপণের জন্য ২-২.৫ মিটার দূরত্বে ৬০ সেমি. চওড়া এবং ৬০ সেমি. গভীর গর্ত করে রোপণ করতে হবে। গর্ত প্রতি ৫-৭ কেজি গোবর, ১২৫ গ্রাম করে ইউরিয়, টিএসপি ও এওপি সার এবং ৫ গ্রাম বরিক এসিড ভালোভাবে মিশিয়ে ৫-৭ দিন পর অসি চারা রোপণ করতে হবে। কলা বাগানে সাথি ফসল হিসেবে ধান, গম, ভুট্টা ছাড়া যে কোনো রবি ফসল চাষ করা যায়। এতে একটি অতিরিক্ত ফসল এবং সে সঙ্গে অর্থও পাওয়া যায়।

শাকসবজি/ আগাম জাতের শীতকালীন সবজি চাষ

এই মুহুর্তে দেশের বিভিন্ন এলাকার জমির মাটি এখনও ভেজা এবং স্যাঁতসেঁতে। আগাম শীতের সবজি উৎপাদনের জন্য উঁচু জয়গা কুপিয়ে পরিমাণ মতো জৈব ও রাসায়নিক সার বিশেষ করে ইউরিয়া দিয়ে শাক উৎপাদন করা যায়। শাকের মধ্যে মুলা, লালশাক, পালংশাক, চিনাশাক, সরিষাশাক অনায়াসে করা যায়। তাছাড়া সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, শালগম, টমেটো, বেগুন, ব্রোকলি বা সবুজ ফুলকপিসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজির চারা তৈরি করে মূল জমিতে বিশেষ যত্নে আবাদ করা যায়।

আখ চাষীদের এ সময়ে করণীয়

আখের পাতা এখোনো যারা ভেঙ্গে দেন নি, দ্রুত তা করে ফেলুন। এসময় আখ ফসলে লালপচা রোগ দেখা দিতে পারে। লালপচা রোগের আক্রমণ হলে আখের কান্ড পঁচে যায় এবং হলদে হয়ে শুকিয়ে যেতে থাকে। এজন্য আক্রান্ত আখ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং জমিতে যাতে পানি না জমে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া রোগমুক্ত বীজ বা শোধন করা বীজ ব্যবহার করলে অথবা রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করলে লালপচা রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। লালপচা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন কয়েকটি আখের জাত হচ্ছে ঈশ্বরদী ১৬, ঈশ্বরদী ২০, ঈশ্বরদী ৩০।

শাকসব্জি

এই মাসে লাউ ও শিমের বীজ বপন করা যায়। এজন্য ৪-৫ মিটার দূরে দূরে ৭৫ সেমি. চওড়া এবং ৬০ সে.মি গভীর করে মাদা বা গর্ত তৈরি করতে হবে। এরপর প্রতি মাদায় ২০ কেজি পঁচা গোবর, ২০০ গ্রাম টিএসপি এবং ৭৫ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। মাদা তৈরি হলে প্রতি মাদায় স্বাস্থ্যবান ৪-৫টি বীজ বুনে দিতে হবে এবং চারা গজানোর ২-৩ সপ্তাহ পর দুই-তিন কিস্তিতে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৭৫ গ্রাম এমওপি সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। উপরি প্রয়োগ এর সময় খেয়াল রাখতে হবে, বৃষ্টি না হলে পানি দেয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে। আর সার দেয়ার সময় গাছের গোড়া থেকে ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি দূর দিয়ে দিতে হবে সার গুলো রিং করে। এ সময় আগাম শীতকালীন সবজি চারা উৎপাদনের কাজ শুরু করা যেতে পারে। সবজি চারা উৎপাদনের জন্য উঁচু এবং আলো বাতাস লাগে এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে। এক মিটার চওড়া এবং জমির দৈর্ঘ্য অনুসারে লম্বাকরে বীজতলা করে সেখানে উন্নতমানের ও উন্নতজাতের উচ্চফলনশীল ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটো এসবের বীজ বুনতে পারেন। বীজতলার মাটি অবশ্যই শুকনো হতে হবে। অন্যথায় গোড়া ও মূল পচা রোগে সব চারা পঁচে যেতে পারে। প্রিয় চাষী ভাই ও বোনেরা যদি কোন গুরুতর সমস্যা হয়, তবে আপনি আপনার এলাকার কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করবেন।

পাট

যে সকল চাষী ফাল্গুন মাসে পাট রোপন করেছেন, এবং পাট পুরোপুরি কাটার উপযোগী হয়ে গেছে, তারা অতি সন্নিকটে পাট কেটে ফেলুন। আর যেখানে জাগ দিবেন সে জায়গাটিও ঠিক করে ফেলুন। পাট গাছ কাটার পর চিকণ ও মোটা পাট গাছ আলাদা করে আঁটি বেঁধে বেশ কয়েকদিন দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে। এত গাছের পাতা ঝরে যাবে। পাতা ঝরে গেলে ৩/৪দিন পাটগাছগুলোর গোড়া এক ফুট পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। এরপর পরিষ্কার পানিতে জাগ দিতে হবে। জাগ দেয়ার পর জাগের উপর কচুরিপানা বা খড় বিছিয়ে দিলে ভালো হয়। তবে মাটি বা কলা গাছ না দেয়াই ভাল, তাহলে পাট এর আশ এর রং এ তারতম্য হয়। জাগ দেয়ার পর নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখতে হবে যেন পাটের আঁশ খুব বেশি পচে না যায়। পাট পচে গেলে পানিতে আঁটি ভাসিয়ে আঁশ ছাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে পাটের আঁশের গুণাগুণ ভালো থাকবে। ছাড়ানো আঁশ পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে বাঁশের আড়ে শুকাতে হবে। যেসব জায়গায় জাগ দেয়ার পানির অভাব সেখানে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচাতে পারেন। এতে আঁশের মান ভালো হয় এবং পচন সময় কমে যায়। তবে মনে রাখতে হবে পাট কাটার সাথে সাথে ছালকরণ করতে হবে, তা না হলে পরবর্তীতে রৌদ্রে পাট গাছ শুকিয়ে গেলে ছালকরণে সমস্যা হবে। তাছাড়া এ পদ্ধতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত শুনতে বা জানতে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সাথে কৃষক ভাই বোনেরা যোগাযোগ করতে পারেন।

ধান

এ মাসেই আমন ধানের বীজতলা তৈরি করতে হয়। তবে বীজতলা তৈরীর আগে কিছু বিষয় কৃষক ভাইদের মাথায় রাখতে হবে। ১. পানিতে ডুবে না এমন উঁচু জমিতে বীজতলা তৈরি করতে হবে। ২.বীজতলায় বীজ বপন করার আগে ভালো জাতের সুস্থ সবল বীজ নির্বাচন করতে হবে। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে ভাল বীজে ভাল ফসল। রোপা আমনের উন্নত জাতগুলো হলো বিআর১০, বিআর২৫, ব্রি ধান৩০, ব্রি ধান৩১, ব্রি ধান৩২, ব্রি ধান৩৩, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৭, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৩৯, ব্রি ধান৪০, ব্রি ধান৪১। এছাড়া লবণাক্ত জমিতে ব্রি ধান৪৪ চাষ করতে পারেন। ভালো চারা পেতে হলে প্রতি বর্গমিটার বীজতলার জন্য ২ কেজি গোবর, ১০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ১০ গ্রাম জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হবে। আষাঢ় মাসে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ শুরু করা যায়। অধিক ফলন পেতে হলে শেষ চাষের সময় হেক্টরপ্রতি ৯০ কেজি টিএসপি, ৭০ কেজি এমওপি, ১১ কেজি দস্তা এবং ৬০ কেজি জিপসাম দিতে হবে। জমিতে চারা সারি করে রোপণ করতে হবে। এতে ধানক্ষেতের পরবর্তী পরিচর্যা বিশেষ করে আগাছা দমন সহজ হবে। কেননা আগাছাই হলো যেকোন ফসলের অন্যতম শত্রু, এতে ফলনও অনেক কমে যায়।

মৎস্যসম্পদ

জ্যেষ্ঠ মাস মধুমাস। তবে এই মধু মাসেও তীব্র তাপমাত্রার কারণে জলজ প্রাণী অর্থাৎ মাছ প্রজাতি পুকুরের ইষৎ উষ্ণ পানিতে খুব বেশি ভাল নেই। যে সকল মাছ চাষীদের পুকুরের পানি খুব গরম হয়ে যাচ্ছে, তারা অতি দ্রুত মাছের মজুদ কমান। * পুকুরে জলজ উদ্ভিদ যেমন কচুরিপানার ব্যবস্থা করুন। এতে পানির তাপ কিছুটা কমবে। তবে অবশ্যিই সেটি পুকুরের মাঝে খানিকটা গর্ত করে, বাঁশ দিয়ে হাপা করে দিতে হবে। তবে মাছ রোগাক্রান্ত হলে, স্থানীয় জেলা মৎস্য অফিস এ যোগাযোগ করে পরামর্শ নেওয়া উচিত। * যে সকল পুকুর বন্যাতে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা আছে সেই পুকুরে পাড় সংস্কার করতে হবে। * রেণু থেকে চারা পোনা তৈরি করার এখনই উপযুক্ত সময়।

গাছ

এ সময়টা গাছের চারা রোপণের জন্য খুবই উপযুক্ত। বসতবাড়ির আশপাশে, খোলা জায়গায়, চাষাবাদের অনুপযোগী পতিত জমিতে, রাস্তাঘাটের পাশে, পুকুর পাড়ে, নদীর তীরে গাছের চারা বা কলম রোপণের উদ্যোগ নিতে হবে। * এ সময় বনজ গাছের চারা ছাড়াও ফল ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করতে পারেন; ফলের চারা রোপণের আগে গর্ত তৈরি করতে হবে; সাধারণ হিসাব অনুযায়ী এক ফুট চওড়া ও এক ফুট গভীর গর্ত করে গর্তের মাটির সাথে ১০০ গ্রাম করে টিএসপি ও এমওপি সার মিশিয়ে, দিন দশেক পরে চারা বা কলম লাগাতে হবে; বৃক্ষ রোপণের ক্ষেত্রে উন্নত জাতের রোগমুক্ত সুস্থ-সবল চারা বা কলম বাছাই করতে হবে। * চারা শুধু রোপণ করলেই হবে না। এগুলোকে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। চারা রোপণের পর শক্ত খুঁটি দিয়ে চারা বেঁধে দিতে হবে। এরপর বেড়া বা খাঁচা দিয়ে চারা রক্ষা করা, গোড়ায় মাটি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার, সেচনিকাশ নিশ্চিত করতে হবে। * নার্সারি মালিক যারা তাদের মাতৃগাছ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি খুব জরুরি। সার প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার, দুর্বল রোগাক্রান্ত ডালপালা কাটা বা ছেটে দেয়ার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।

প্রাণীসম্পদ

যারা গবাদিপশু বা হাঁস মুরগী পালন করেন তাদের গৃহপালিত পশু-পাখির বিশেষ যত্ন এই সময়ে করতে হবে। বর্ষা পুরোপুরি আসার আগেই হাঁস-মুরগীর বাচ্চা উৎপাদন করুন। যেহেতু এখন প্রচন্ড তাপ-দাহ চলছে তাই আপনার গৃহে পালিত প্রাণীকে পর্যাপ্ত পরিষ্কার পানি সরবরাহ করুন। দিনের প্রখর রৌদ্রে তাদেরকে ছায়া ও শীতল স্থানে রাখুন। পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার দিন। গত ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন না দিয়ে থাকলে স্থানীয় সরকারী প্রাণী হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।

বেতার লাইভ

আপনার পছন্দের কেন্দ্র / ইউনিট বাছাই করুন এবং অনলাইনে বাংলাদেশ বেতার শুনুন সবখানে, সবসময়

স্বাগতম

কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার

কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার, কৃষি তথ্য সার্ভিস এবং কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে কৃষি সার্ভিস দপ্তরের কর্মীদের অংশগ্রহণে তাদের আহরিত সম্প্রচার দক্ষতা ও কারিগরী জ্ঞান অনুষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের কাছে উপস্থাপন করে থাকেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, বান্দরবান, কুমিল্লা, বরিশাল এবং ঠাকুরগাঁও -এই ১২(বার)টি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন এসব অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন কৃষি বিষয়ক জাতীয় অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। এই কেন্দ্রগুলো থেকে প্রতিদিন ২৯০ মিনিটের কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়ে থাকে।

কৃষি ভিত্তিক অনুষ্ঠান

কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার চাষী ভাইদের জন্য সর্বাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, সার, বীজ, কীটনাশক সম্পর্কিত তথ্য প্রদান এবং চাষাবাদ, খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য প্রচার করে।

মৎস্য সম্পদ বিষয়ক অনুষ্ঠান

কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার মৎস্যচাষি, মৎস্যজীবী এবং মৎস্য ব্যবসায়ীদের জন্য মৎস্য চাষ, পরিচর্যা এবং বিপণন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ভিত্তিক অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে।

পশুসম্পদ বিষয়ক অনুষ্ঠান

কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগীর খামার লাভজনক এবং নিরাপদ উপায়ে পরিচালনার জন্য আধুনিক এবং সময় উপযোগী বিভিন্ন তথ্য সম্বলিত অনুষ্ঠান প্রচার করে।

কৃষিবিদদের সাক্ষাৎকার

কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার কৃষি / মৎস্য সম্পদ / পশুসম্পদ বিষয়ক সমসাময়িক বিভিন্ন সমস্যা এবং সমাধান বিষয়ে কৃষিবিদদের সাক্ষাৎকার প্রচার করে।

কৃষি বিষয়ক নাটক/গান/জিঙ্গেল

কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার চাষী ভাইদের বিভিন্ন মৌসুমে করণীয় ও সমস্যা সম্পর্কে অবহিত করা; সর্বাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, সার, বীজ, কীটনাশক সম্পর্কিত তথ্য প্রদান এবং চাষাবাদ, খাদ্য নিরাপত্তা, একটি বাড়ি একটি খামার, মৎস ও পশু সম্পদ পরিচর্যা সম্পর্কে অবহিত করতে নাটক/গান/জিঙ্গেল প্রচার করা হয় ।

সরকারের বিভিন্ন কৃষি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন

কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার কৃষি এবং কৃষকের সামগ্রিক কল্যাণের জন্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কৃষি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদনন প্রচার করে থাকে ।

সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি (সিটিজেন চার্টার)

কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, বাংলাদেশ বেতার

বিশেষ এবং জনপ্রিয় অনুষ্ঠান সমূহ

কৃষি সমাচার

কৃষি / মৎস্য / পশুসম্পদ এবং বাজার দর বিষয়ক অনুষ্ঠান

প্রতিদিন     সকাল ৭-৫০ মিনিট

সোনালি ফসল

আসর ভিত্তিক আঞ্চলিক অনুষ্ঠান

প্রতিদিন     সন্ধ্যা ৬-০৫ মিনিট

দেশ আমার মাটি আমার

কৃষি ভিত্তিক জাতীয় অনুষ্ঠান

প্রতিদিন     সন্ধ্যা ৭-০৫ মিনিট

সবুজ প্রান্তর

ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান

প্রতি শুক্রবার     বিকাল ৫-৫০ মিনিট (ঢাকা-ক)

শস্য-শ্যামল

ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান

মাসের ২য় শুক্রবার     রাত ৮-৩০ মিনিট (ঢাকা-খ)

মাননীয় উপদেষ্টা
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়

মোঃ নাহিদ ইসলাম
মাননীয় উপদেষ্টা
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়

সচিব
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়

মাহবুবা ফারজানা
সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়

মহাপরিচালক
বাংলাদেশ বেতার

এ এস এম জাহীদ
মহাপরিচালক, বাংলাদেশ বেতার

পরিচালক

এস এম আবুল হোসেন

জাতীয় সঙ্গীত

জরুরি হটলাইন